এক বছরেই বাংলাদেশ কর্মকমিশন (পিএসসি) নন–ক্যাডারে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সাত হাজারের বেশি নিয়োগ দিয়েছে। পিএসসি বলছে, তারা আগের চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয়। তাই ক্যাডার নিয়োগের পাশাপাশি অনেক নন–ক্যাডারে নিয়োগ দিয়েছে।
পিএসসি সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরে সবচেয়ে বেশি নিয়োগ দিয়েছে পিএসসি। এতে পাঁচ হাজার ১০০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই নিয়োগের প্রথম লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়। পরে পিএসসি সেই পরীক্ষা বাতিল করে আবার পরীক্ষা নিয়ে এ নিয়োগ সম্পন্ন করে। পিএসসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পেয়েই পিএসসি আর দেরি করেনি। তাই সেই পরীক্ষা আবার নেওয়া হয়। একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৫৫০ জন মিডওয়াইফ (১০ম গ্রেড) নিয়োগ দেওয়া হয়।
গত বছর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, জনপথ অধিদপ্তরে উপসহকারী প্রকৌশলী (১০ম গ্রেড) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ৬৫৩ জন।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে সহকারী প্রোগ্রামার (নবম গ্রেড) নিয়োগ করে ৩০৩ জন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এস্টিমেটর (১০ম গ্রেড) পদে নিয়োগ পেয়েছে ৭২ জন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলে ড্রাফটসম্যান পদে ৫৭ জন নিয়োগ পেয়েছেন।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মেডিকেল অফিসার (নবম গ্রেড) নিয়োগ হয়েছে ১৫২ জন। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে পরিসংখ্যান কর্মকর্তা নিয়োগ হয়েছে ৬০ জন। সব মিলিয়ে ৭ হাজার ১২ জন কর্মকর্তাকে নিয়োগের সুপারিশ করেছে পিএসসি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় যখন নিজেদের উদ্যোগে বিভিন্ন পদে নিয়োগের কার্যক্রম পরিচালনা করে, তখন সেখানে অনেক তদবির ও নিয়োগ–বাণিজ্য হয়। এতে মেধাবীরা নিয়োগবঞ্চিত হন। অসাধু মানুষের পকেট ভারী হয়। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এই সমস্যা এড়াতে সরকার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে পিএসসিকে দায়িত্ব দেয়।
পিএসসি সূত্র জানায়, নন–ক্যাডারে সরাসরি নিয়োগের পাশাপাশি পিএসসি বিসিএসে নন–ক্যাডার থেকেও নিয়োগ দেয়। এতে অনেকের চাকরি হয়। প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক, সমাজসেবা অফিসার, সাবরেজিস্ট্রার, জেলার, খাদ্য কর্মকর্তাসহ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির বিভিন্ন ভালো পদে নিয়োগ দেয় পিএসসি। এই নিয়োগ হয় স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়। এতে মেধাবীরা ভালো চাকরির সুযোগ পান।
নন–ক্যাডারে নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১০ সালে বিধিমালা অনুসারে আমরা নন–ক্যাডার পদে নিয়োগ দিয়ে আসছি। সরাসরি নন–ক্যাডার ছাড়াও বিসিএসে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নন–ক্যাডারের নিয়োগ দিচ্ছি আমরা। এতে নিয়োগপ্রক্রিয়া সহজ হচ্ছে, মেধাবীরা চাকরি পাচ্ছেন। নিয়োগের গতি ত্বরান্বিত হচ্ছে। মন্ত্রণালয়গুলো আমাদের শূন্য পদের চাহিদাপত্র দিচ্ছে। সেই তালিকা ধরে আমরা মেধাবীদের চাকরি দিচ্ছি।’ বছর বছর নন–ক্যাডারে নিয়োগের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান তিনি। সূত্রঃ প্রথম আলো