সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি এবং বিদ্যমান অধ্যাদেশের সংশোধনীর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ থেকে বাড়িয়ে ৩৩ বছর করা হচ্ছে। গত বছর জারি করা গেজেটে নানা অস্পষ্টতা থাকায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
কেন এই সংশোধনী প্রয়োজন?
গত বছর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারণ করে যে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর ফলে কিছু নির্দিষ্ট পদে অধিক বয়সে নিয়োগের সুযোগ কমে গেছে। যে কারণে এই সংশোধনী জরুরি হয়ে পড়েছে:
- বিভাগীয় প্রার্থীদের বয়সসীমা: পূর্বের গেজেটে বিভাগীয় প্রার্থীদের বয়সসীমা বা তাদের ক্ষেত্রে বয়স শিথিল করা হবে কিনা, তা স্পষ্ট করা হয়নি। ফলে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া জটিল হয়েছে।
- বিশেষজ্ঞ পদের নিয়োগ: কিছু পদে, যেমন সরকারি মেডিকেল কলেজ বা কলেজের সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপক, প্রিন্সিপাল এবং কম্পিউটার পারসোনেল পদে অধিক বয়সে নিয়োগের বিধান ছিল। কিন্তু নতুন গেজেটে এই বিষয়ে কিছু উল্লেখ না থাকায় সেই পদগুলোতে সরাসরি নিয়োগ বন্ধ হয়ে গেছে।
- নিয়োগের যোগ্যতা হারানো: ৩২ বছর বয়সসীমা নির্ধারণ করায় অনেক যোগ্য প্রার্থী, যাদের ক্ষেত্রে পূর্বের নিয়মে বেশি বয়সে আবেদন করার সুযোগ ছিল (যেমন, ৪০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত), তারা এখন আর আবেদন করতে পারছেন না।
প্রস্তাবিত পরিবর্তনসমূহ
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য একটি সংশোধিত অধ্যাদেশ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এতে যে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হতে পারে:
- বয়সসীমা বৃদ্ধি: সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সাধারণ বয়সসীমা ৩২ থেকে বাড়িয়ে ৩৩ বছর করা হচ্ছে।
- পদভিত্তিক বয়সসীমা: বিভিন্ন ক্যাটাগরির পদের জন্য আলাদা বয়সসীমা নির্ধারণ করা হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু বিশেষজ্ঞ পদে আগের মতোই অধিক বয়সে আবেদনের সুযোগ ফিরিয়ে আনা হতে পারে।
- বিভাগীয় প্রার্থীদের জন্য সুযোগ: বিভাগীয় প্রার্থীদের জন্য বয়সসীমা শিথিল করার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকবে।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া এই সংশোধনীকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পূর্বের অধ্যাদেশে অনেক জটিলতা ছিল, যা এই সংশোধনীর মাধ্যমে দূর করা সম্ভব হবে।
এই প্রস্তাবটি এখন উপদেষ্টা পরিষদের কাছে উপস্থাপন করা হবে। এটি অনুমোদিত হলে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও সহজ ও সুশৃঙ্খল হবে বলে আশা করা যায়।