সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায় টানানো ব্যানারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক যুবক রঙ মাখাচ্ছেন। সেটা দেখেই একজন ছেলেটাকে হাতেনাতে ধরার জন্য মোবাইলে ভিডিও করতে করতে সামনে এগিয়ে যান। কিন্তু সামনে এগিয়ে গিয়েই ভুল ভাঙে। ঘটনা ঠিক উল্টো। ছেলেটি আসলে রঙ মাখাচ্ছেন না, বরঞ্চ কতিপয় ব্যক্তি ছবিটিতে রঙ মাখিয়ে বিকৃত করেছিলেন। আর সেই রঙ যুবকটি নিজের পকেট থেকে টিস্যু বের করে মুছে দিচ্ছিলেন।

বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি। প্রধানমন্ত্রী নিজেই ভিডিওটি দেখে অবাক হয়েছেন। দেখা করতে চেয়েছেন যুবকের সাথে। যুবকের নাম রাজু আহমেদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে নিজে ডেকে নিয়েছেন। ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ব্যাংকের চাকরির। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন।

জানা গেছে, গতমাসে আয়কর মেলা উপলক্ষ্যে গাজীপুরে বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামের সামনে শেখ হাসিনার ছবিতে ইচ্ছাকৃত লাগানো রঙ সে টিস্যু দিয়ে পরিস্কার করছিল। বিষয়টি দেখতে পেয়ে সন্দেহবশ গাজীপুর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী সরকার ভিডিও করে রাজুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু রাজু জানায় সে টিস্যু দিয়ে নেত্রীর বিকৃত ছবি পরিস্কার করছিল। এতে মেহেদী বিব্রত হয়; নিজের ভুল বুঝতে পারে। পরে সে ফেসবুকে ভিডিওটি আপলোড করে। ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিও। পরে এটি যাচাই বাছাই করা হয় আসলেই নাকি সাজানাও।

রাজুর বাবা পেশায় একজন চা বিক্রেতা।মানুষের সহযোগিতায় সে লেখাপড়া করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পায়। এরপর উত্তরায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইইউবিএটিতে ভর্তি হয়। রাজুর পরিবারের কথা শুনে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিনাবেতনে পড়ার সুযোগ দেয়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সে চাকুরী খুঁজতে থাকে। কিন্তু চাকরি আর হয় না।

গত ১৪ ডিসেম্বর গণভবনে ইশতেহার কমিটির বৈঠক শেষে ইশতিহার কমিটির সদস্য দীপক কুমার বনিক দীপু প্রধানমন্ত্রীকে রাজুর ভালোবাসার ভিডিও দেখান। প্রধানমন্ত্রী দেখে অবাক হন এবং রাজুর সাথে দেখা করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। সেদিন রাতে ইশতেহার টিমের এক সদস্য এবং যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার নাজমুল হোসেন ফেসবুকে যুবকটির সন্ধান চাই সংক্রান্ত পোস্ট দেন। সেই সাংবাদিকের বন্ধু গাজীপুরের একটি গার্মেন্টের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাজুর সন্ধান দেন। 

এরপর রাজুর সাথে যোগাযোগ করে তাকে ঢাকায় আসতে বলেন আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পান রাজু আহমেদ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেদিনের ঘটনা শুনে বিষ্মিত হন। তার পরিবারের খোঁজখবর নেন। এরপর রাজুকে ফার্মার্স ব্যাংকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাতের পর আপ্লুত রাজু। তিনি মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীর ভালোবাসায় বিষ্মিত। তিনি জানান, এদেশের তরুণদের মনের কথা বুঝতে পেরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাকরিতে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করেছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তরুণ প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের পক্ষে নৌকায় ভোট চেয়েছেন। সূত্রঃ  কালের কন্ঠ