জনতা ব্যাংকের অফিসার নিয়োগের প্রিলি পরীক্ষার প্রস্তুতি

২০১৭ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির সদস্যভুক্ত জনতা ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ)-এর ৬৩৩টি পদের প্রিলিমিনারি (এমসিকিউ) পরীক্ষা হবে ২০ মার্চ সকাল ১০টায়। শেষ মুহূর্তে কিভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যায়, সেসব নিয়ে জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মোহাম্মদ আলমগীর মাহমুদ ও রাজিব কুমারের সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন


জনতা ব্যাংকের অফিসার নিয়োগের প্রিলি পরীক্ষার প্রস্তুতি


প্রস্তুতির শুরুতে প্রথম কাজই হলো প্রশ্ন বিশ্লেষণ। প্রশ্নকাঠামো কেমন, কী ধরনের প্রশ্ন হয়, কোন বিষয় থেকে সচরাচর কোন প্রশ্নগুলো আসে—এটা আগে বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে

পরীক্ষা পদ্ধতি

জনতা ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) পদের জন্য পরীক্ষা হয় তিন ধাপে। প্রথম ধাপে ১০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি (এমসিকিউ, ১ ঘণ্টা) পরীক্ষা। দ্বিতীয় ধাপে, ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হয়। আর সব শেষে ২৫ নম্বরের ভাইভা।

প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, কম্পিউটার জ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তির ওপর মোট ১০০ নম্বরের প্রশ্ন থাকে। এ ক্ষেত্রে সাধারণত গণিতে ৩০ নম্বর, ইংরেজিতে ২৫ নম্বর, বাংলায় ২০ নম্বর, সাধারণ জ্ঞানে ১৫ ও কম্পিউটর/তথ্য-প্রযুক্তিতে ১০ নম্বর থাকে।

শেষ সময়ের ৬ পরামর্শ

১। প্রস্তুতির শুরুতে প্রথম কাজই হলো প্রশ্ন বিশ্লেষণ। প্রশ্নকাঠামো কেমন, কী ধরনের প্রশ্ন হয়, কোন বিষয় থেকে সচরাচর কোন প্রশ্নগুলো আসে—এটা আগে বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ধরন সম্পর্কে যত ভালো ও স্বচ্ছ ধারণা থাকবে, প্রস্তুতি নিতে তত সহজ হবে। প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে করণীয় ঠিক করতে হবে এবং দরকারি তথ্য নোট করে রাখতে হবে। এগুলোর ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুতি পরিকল্পনা করতে হবে। প্রতিটি বিষয় পড়া বা চর্চার পর সেগুলো রিভিশন দেবেন। এ ছাড়া বিগত বছরের প্রশ্ন বা নমুনা প্রশ্ন দেখে বাসায় বিষয়ভিত্তিক মডেল টেস্ট দেবেন।

২। চাকরি পেতে হলে যে করেই হোক—গণিতে দক্ষ হতে হবে। যাঁদের গণিতে মোটামুটি ভালো প্রস্তুতি আছে, তাঁরাও বেশি বেশি চর্চা করুন। যাতে পরীক্ষার হলে কম সময়ে বেশি অঙ্কের সমাধান করতে পারেন। যাঁরা গণিতে দুর্বল, তাঁরা পর্যায়ক্রমে সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির গণিত বই অনুশীলন করতে পারেন। এ ছাড়া বাজারের প্রচলিত গাইড বই থেকে পর্যায়ক্রমে সহজ থেকে কঠিন টপিকের গণিতগুলো অনুশীলন করতে পারলে খুব ভালো হয়।

৩। প্রতিদিন অল্প করে হলেও ইংরেজিতে সময় দিন। বিগত নিয়োগ পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো বাসায় বসে সমাধান করুন। নিয়মিত গ্রামারের রুলসের সঙ্গে বিগত সালের প্রশ্নগুলো অনুশীলন করুন।

প্রতিদিন সকালে Synonyms-Antonyms, Group verbs, Appropriate prepositions, Idioms and phrase, Spelling mistakes, One word substitutions—এসব টপিক পড়তে পারেন। আর যা যা পড়েছেন, পরের দিন সেগুলো রিভিশন দেওয়ার চেষ্টা করবেন, তাহলে মনে থাকবে।

৪। সাধারণ জ্ঞানের প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত পত্রিকা মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। এ ছাড়া বাজারে প্রচলিত ভালো মানের একটা গাইড বই থেকে স্থায়ী সাধারণ জ্ঞানের বিষয়গুলো পড়া যেতে পারে। মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের সংবিধান থেকে প্রশ্ন আসে প্রায় সব পরীক্ষায়। মুজিববর্ষ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত প্রশ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষাবিষয়ক তথ্য, বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিবিষয়ক তথ্য যেমন—জিডিপি, মাথাপিছু আয়, মুদ্রা, জাতীয় ব্যাংকের নাম, জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংকসহ এদের অঙ্গসংগঠন, বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক চুক্তি প্রভৃতি থেকে প্রশ্ন এসে থাকে।

৫। প্রায় সব চাকরিতেই কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তির (আইটি) ওপর প্রশ্ন আসে। এ বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য বাজারের ভালো মানের একটি বা দুটি গাইড বই আর দৈনিক পত্রিকাই যথেষ্ট। এক মাসে কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তিতে ভালো প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব।

৬। ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষাগুলোতে দেখা যায়, বাংলা সাহিত্য অংশের চেয়ে ব্যাকরণ অংশে বেশি প্রশ্ন এসে থাকে। ব্যাকরণ অংশে প্রস্তুতির জন্য নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড ব্যাকরণ বইটি খুব ভালোভাবে পড়তে হবে। কিছু বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে। তা হলো—শব্দ, সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ, বাগধারা, বানান, পরিভাষা, এককথায় প্রকাশ, প্রবাদ-প্রবচন প্রভৃতি। সাহিত্য অংশে বিগত সালের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো ভালো করে পড়তে হবে।

সূত্র: কালের কণ্ঠ