আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। গত সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা থাকলেও ৩৮তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে নতুন এ বিসিএস পরীক্ষার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ২ হাজার ১৩৫টি শূন্য ক্যাডার পদের চাহিদা পেয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে, ৩৭তম বিসিএসের দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে আগামী সপ্তাহে আরেকটি তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক ইত্তেফাককে বলেন, ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি নভেম্বর মাসের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে। সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে। একইসঙ্গে ডিসেম্বর মাসে ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের পরিকল্পনা আছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে ৩৭তম বিসিএসে নন-ক্যাডার পদে দ্বিতীয় শ্রেণির একটি তালিকা প্রকাশ করা হবে।
চলতি বছর অনুষ্ঠিত হওয়া ৪০তম বিসিএস সাধারণ হলেও ৩৯তম বিসিএস ছিল বিশেষ। তাছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ৪১তম বিসিএসের শূন্য পদের চাহিদা আসার পরপরই সাধারণ বিসিএস হিসাবে আয়োজনে প্রস্তুতি নেয় পিএসসি। গুঞ্জন ছিল ৪১তম বিসিএসও বিশেষ হতে পারে। কিন্তু পিএসসি সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, ৪১তম বিসিএস হবে সাধারণ।
পিএসসির সূত্র জানিয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আগেই ৪১তম এ বিসিএসের শূন্য পদের চাহিদা জানিয়েছিল। সম্প্রতি বিভিন্ন ক্যাডারের শূন্য পদ অনুযায়ী এ সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ৯ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পিএসসির কাছে ২ হাজার ১৩৫টি শূন্য পদের সংখ্যা জানিয়ে ৪১তম বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছে। ৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে ৩২৩ জন, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫ জন এবং পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার পদে ১০০ জন নিয়োগ পাবেন। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য শূন্য পদের মধ্যে রয়েছে-শুল্ক ও আবগারিতে ২৩টি, কর ক্যাডারে ৬০টি, আনসারে ২৩টি, নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারের ২৫টি, সমবায় ক্যাডারের ৮টি, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা পদে ১২টি, তথ্য ক্যাডারে ৪৭টি, বিসিএস কৃষি ক্যাডারের ১৮৯টি, বাণিজ্য ক্যাডারের সহকারী নিয়ন্ত্রকের ৪টি, স্বাস্থ্য ক্যাডারের সহকারী সার্জন, ডেন্টাল সার্জনের ১৪০টি এবং সাধারণ শিক্ষায় ৮৯২টি।
ডিসেম্বরে ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা : ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে। চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, নভেম্বরের শেষ দিকে লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করার পরিকল্পনা করছে কমিশন। আমাদের লক্ষ্য ৪০তম বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করা। আমরা সবসময়ই পরীক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করি। এখন পরীক্ষার কেন্দ্র যাচাই করছি। একইসঙ্গে পরীক্ষকরা প্রশ্নপত্রও প্রস্তুত করছেন।
৪০তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় গত জুলাই মাসে। এতে অংশ নেওয়া ৩ লাখ ২৭ হাজার চাকরি প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ২০ হাজার ২৭৭ জন উত্তীর্ণ হন। পিএসসির রেকর্ড অনুযায়ী, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি চাকরি প্রার্থীর আবেদন করেন ৪০তম বিসিএসে। এ বিসিএসে ৪ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী আবেদন করেন। কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় পিএসসির অধীনে এতসংখ্যক আবেদন আগে কখনো জমা পড়েনি। ৪০তম বিসিএসের মাধ্যমে মোট ১ হাজার ৯০৩ জন ক্যাডার নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। যার মধ্যে প্রশাসনে ২০০, পুলিশে ৭২, পররাষ্ট্রে ২৫, করে ২৪, শুল্ক আবগারিতে ৩২ ও শিক্ষা ক্যাডারে প্রায় ৮০০ জনকে নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে। সূত্রঃ ইত্তেফাক