আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা এপ্রিল মাসে আর এইচএসসি পরীক্ষা জুন মাসে অনুষ্ঠিত হবে। সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বরে পূর্ণ সময়ে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস ফেব্রুয়ারি এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস চলবে মার্চ পর্যন্ত। সাধারণত ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
জানা গেছে, চলতি বছরের অর্থাৎ ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুসারে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার আয়োজন করা হবে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুযায়ী। আর ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য ঘোষিত ১৮০ দিনের সিলেবাস অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে পরীক্ষার নিয়ে মন্ত্রী বলেন, সাধারণত এসএসসি-দাখিল ও সমমান পরীক্ষা ফেব্রুয়ারি মাসে এবং এইচএসসি-আলিম ও সমমান পরীক্ষা এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি-দাখিল ও সমমান পরীক্ষা এপ্রিল মাসে এবং এইচএসস-আলিম ও সমমান পরীক্ষা জুন মাসে অনুষ্ঠিত হবে। এসএসসি-দাখিল ও সমমান পরীক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং এইচএসসি-আলিম ও সমমান পরীক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ পর্যন্ত চলবে। এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সব বিষয়ের পূর্ণ নম্বরে এবং পূর্ণ সময়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি-দাখিল ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি-দাখিল ও সমমান পরীক্ষার্থীরা নবম শ্রেণিতে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়নি। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ মার্চ পর্যন্ত সপ্তাহে দুই দিন করে সরাসরি ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছে। এর মধ্যে ২০ জানুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অমিক্রনের সংক্রমণে আবারও প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। ১৫ মার্চ থেকে তারা সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে সপ্তাহে ছয় দিন করে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে এই পরীক্ষার্থীরা নবম ও দশম শ্রেণিতে মিলে সর্বমোট ১৬২ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। স্বাভাবিক অবস্থায় তাদের ৩১৬ কর্মদিবস ক্লাস করার কথা। এরা ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে অষ্টম শ্রেণিতে জেএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি, নবম শ্রেণিতে পরীক্ষা দিতে পারেনি। যদিও এই পুরো সময়টায় তারা টেলিভিশনের ক্লাসে এবং অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করেছে, অ্যাসাইনমেন্ট করেছে। এসব ক্লাস এবং অ্যাসাইনমেন্টগুলো ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ১৫০ কর্মদিবসের পরিমার্জিত পাঠ্যসূচি অনুসারেই পরিচালিত হয়েছে।
এসব দিক বিবেচনায় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি-দাখিল ও সমমান পরীক্ষা ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষার জন্য ঘোষিত সিলেবাস অনুসারেই অনুষ্ঠিত হবে, যোগ করেন ডা. দীপু মনি।
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি-আলিম ও সমমান পরীক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি-আলিম ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এই শিক্ষার্থীরা ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই থেকে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস করার কথা ছিল কিন্তু তারা ক্লাস শুরু করতে পেরেছে চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে অর্থাৎ ইতোমধ্যে তারা ৮ মাস ক্লাস করার সুযোগ পায়নি। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের স্বাভাবিক শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে তারা সর্বমোট ২০০ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে। স্বাভাবিক অবস্থায় ৩৩০ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রম হতো। এই পরীক্ষার্থীরা ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি-দাখিল ও সমমানের সংক্ষিপ্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে। এ অবস্থায় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি-আলিম ও সমমান পরীক্ষা ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত ১৮০ কর্মদিবসের পাঠ্যসূচি অনুসারে অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্রঃ দৈনিক শিক্ষা