বাংলাদেশ কোন গরিব দেশ হয় । বাংলাদেশ উন্নত দেশের থেকেও উন্নত কিন্তু আমাদের দেশের বড় বড় কিছু সমস্যা আছে, সেই সমস্যার জন্য আমরা অনেক পিছিয়ে পরে যাচ্ছি , সবচেয়ে বড় সমস্যা দেশের রাজনীতি । আমাদের দেশে পেশার রাজনীতি চলে কিন্তু রাজনীতি কারো পেশা হতে পারে না। যতখন পর্যন্ত আমরা পেশার রাজনীতি থেকে বের হতে পারবো না ততখন পর্যন্ত রাষ্ট্রের তেমন কোন উন্নয়ন হবে না।আমরা প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্র থেকে আমাদের রাষ্ট্রের জন্য কিছু নিতে পারি প্লেটোর আদর্শ রাষ্ট্রে শাসক শ্রেনীকে (তত্ত্বাবধায়ক এবং সাহায্যকারী দুই শ্রেনীকেই) একটা সাম্যবাদী জীবন (Communistic Life) মেনে চলতে হবে। তাদের (শাসকদের) নিজেদের প্রয়োজনের চেয়ে “এক ছটাক” পরিমান সম্পত্তি বেশি থাকতে পার বে না। তারা তাদের নিজেদের জন্য জমি, বাড়ি বা অন্যান্য দামী সামগ্রী কিনতে পারবে না। আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন, এ আর এমন কি? নিজের জন্য না কিনুক, তার পরিবারের সদস্যদের জন্য দামী দামী জিনিস কিনলেই তো হয়?(যেমনটা আমরা এখনকার অনেক নেতাদের ক্ষেত্রে দেখি) । এই সমস্যা দূর করার জন্য আমরা কিছু যুক্ত করতে পারি দেশের সংবাদ মাধ্যম কে স্বাধীনতা দিতে হবে শাসক শ্রেণীর অর্থের হিসাব খুঁজে বের করতে হবে । আর শাসকদের পরিবারকে কে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে ছেলে মেয়েদের বয়স ৩০ বছর পর্যন্ত। তা হলে শাসক শ্রেনীরও সমস্যা হবে না।তাও যদি দেশের রাজনীতিক নেতারা ঠিক হয় কিন্তু এইটা অবাস্তব আমাদের দেশের জন্য তাই আমরা দেশের বেকার দের নিয়েই কথা বলি ।
কেন দেশের বেকার সমস্যা দূর হচ্ছে নাঃ
১।দেশের অর্থ পাচার- ছয় লাখ কোটি টাকা পাচার ১০ বছরে (সূত্রঃ যুগান্তর ও কালের কন্ঠ এবং প্রথম আলো )
২। ব্যাংকিং খাতে অরাজকতা- দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায়
১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার ওপরে( সূত্রঃ প্রথম আলো)
৩। বড়পুকুরিয়ায় কয়লা গায়েব- ২০০ কোটি টাকা( সূত্রঃ প্রথম আলো )
৪। ব্যাংকের টাকা চুরি- ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ৮শ’ কোটি টাকা চুরি ( সূত্রঃ প্রথম আলো)
৫।কয়লার পর পাথর চুরি!- ৫৬ কোটি টাকা মূল্যের (সূত্রঃ যুগান্তর)
৬।২০১০-এ শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি! এইটার টাকার পরিমান কোন নিউজে পাইনি তবে ২ লাখ কোটি টাকার বেশি! বলা আছে দৈনিক সংগ্রামে
(রাষ্ট্র হারিয়েছে মোটঃ ৬০০০০০ + ১২৫০০০+ ২০০+ ৮০০+ ৫৬+ ৯০০ (শেয়ার বাজার ধরলাম ) = ৭,২৬,৯৫৬ কোটি টাকা )
দেশের বাজেটঃ
২০০৯-১০-১১ জুন ২০০৯- ১,১৩,১৭০কোটি টাকা
২০১০-১১-১০ জুন ২০১০- ১,৩২,১৭০কোটি টাকা
২০১১-১২-৯ জুন ২০১১- ১,৬৩,৫৮৯ কোটি টাকা
২০১২-১৩-৭ জুন ২০১২ - ১,৯১,৭৩৮ কোটি টাকা
২০১৩-১৪-০৬ জুন ২০১৩- ২,২২,৪৯১ কোটি টাকা
মোট বাজেট হয়েছেঃ ৮,২৩৫৫৮ কোটি টাকা
পাঁচ বছরের বাজেট- ১০ বছরের হারানো টাকা= ৮,২৩৫৫৮-৭,২৬,৯৫৬
একটা রাষ্ট্র ১০ বছরে যে টাকা হারিয়েছে তা দেশের প্রায় ৫বছরের বাজেটের সমান (২০০৯-২০১৪) । তা হলে এই দেশে বেকার থাকবে না ,তো কোন দেশে বেকার থাকবে? দেশে দিন দিন আরো বেকার বৃদ্ধি পাবে কারণ বেশি ভাগ মানুষ কৃষি বিমুখ হচ্ছে। দেশে এখন দূর্নীতি ও আইনের শাসন স্বাভাবিক করতে হবে, না হলে আগামী ১০-২০ বছরের মধ্যে দেশে একটা বড় সমস্যার সৃষ্টি হবে যা হানাহানি পর্যায়ে যাবে।
৭,২৬,৯৫৬ কোটি টাকা যদি রাষ্ট্রের থাকতো ,রাষ্ট্র আজ চোখ বন্ধ করে কম করে হলেও ৪০লাখ থেকে ৫০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারতো । আর এই ৫০ লাখ যদি ৫ জন করে কর্মসংস্থান দিতো আজ দেশে বেকার বলে কোন শব্দ থাকতো না।কর্মসংস্থান কি ভাবে দিবে??? তারা কি কাজ করবে এইটা সবার একটা বড় চিন্তা ।শুধু সরকারি চাকরি মানেই কর্মসংস্থান না । সরকারি চাকরি বছরে ২০ হাজার -৩০ হাজার মানুষ পাবে কিন্ত আমাদের দেশের বেকার ৪কোটি সেই চিন্তা মাথায় রাখতে হবে। তাই আলাদা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। দেশের বাণিজ্য ঘাটতি দূর করার জন্য বেকারদের কর্মসংস্থান কাজে লাগাতে পারে দেশের সরকার । যে পণ্য গুলো আমারা আমদানি করি সেইটা আমরা নিজেরা তৈরি করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে দেশের বেকার সমস্যা থাকবে না। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) পণ্য বাণিজ্যে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫১ কোটি ডলার ( সূত্রঃ কালের কন্ঠ) = 4510000000 × 80= 360800000000 টাকা ।
মাত্র ৬ মাসে বাণিজ্যের এই অবস্থা হলে দেশের উন্নয়ন কি ভাবে হবে। দেশের তরুন সমাজ কে কাজে , না লাগাতে পারলে রাষ্ট্রের কোন দিন উন্নয়ন হবে না। বিদেশি পণ্য নয় দেশী পণ্য ব্যবহারে মানুষ কে জাগিয়ে তুলতে হবে। দেশের বৃহৎ স্বার্থে দলমত নির্বিশেষে আমাদের ঐক্য হতে হবে । দেশের অর্থ পাচার বন্ধ করতে হবে , দূর্নীতি বন্ধ করতে হবে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, দেশের বেকার সমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে ।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ নিউজ পেপারে যা পেয়েছি তা নিয়ে শুধু আলোচনা করেছি এখানে আমার ব্যাক্তিগত কোন তথ্য নাই ।
( কোন ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন )