এই বিষয়ে কথা বলার আগেই আপনাদের মনে করে দিতে চাই যেখানে ১৪ দিনের মধ্যেই করোনার লক্ষণ দেখা দেয় ,সেই খানে আমরা ৬০দিন লকডাউন দিয়েও রোগি আলাদা করতে কেন পারলাম না। ১৫ দিনেই সম্ভব করোনা মুক্ত করা কিন্তু প্রয়োজন ১০০% কার্যকারি পদক্ষেপ । যদি এই পদক্ষেপ নিতে না পারে , তা হলে ১ বছরেও সম্ভব না করোনা মুক্ত করা । দিন দিন বেড়েই যাবে রোগি ।আর মানুষ অভাবে পরে বাড়ি থেকে বেড় হবে। তাই ঈদের ছুটিই হতে পারে সরকারের জন্য শেষ সুযোগ ।লক ডাউনের শুরুর আগেই এই বিষয়ে বলেছিলাম ১৫ দিনের পরিকল্পনা নিলে সম্ভব করোনা মুক্ত হওয়া । না হলে ১ বছরেও করোনা সমস্যা থেকে বেড় হওয়া সম্ভব না।
১। স্থানান্তর - যখন লকডাউন দেয় তখন ঢাকা থেকে ও জেলা শহর থেকে মানুষ গ্রামে গিয়েছে যার জন্য করোনা সংক্রামণ বেশি হয়েছে ।একটা জেলার দিকে লক্ষ্য করেন- বগুড়া জেলার কথায় চিন্তা করেন ৯০% করোনা রোগী ঢাকা ফেরত এবং তাদের সংস্পর্শে এসে ১০% নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ।
২। লকডাউন ভুল- লকডাউন নামে মাত্র ছিল । যখন লকডাউন ছিল তখনও আমার দেখা অনেকেই ঢাকা থেকে বাড়িতে এসেছে । এমন কি আমি যে বিল্ডিং এ থাকি তার ৫ তলায় একজন এসেছিল লকডাউনের সময়।যদিও তাকে প্রবেশ করতে দেয়নি ।এমন কি আমার গ্রামের এলাকায় খবর নিয়েছি , সে খানেও অনেকে এসেছে । এইটা শুধু আমাদের কষ্ট বৃদ্ধি করেছে কোন কাজেই দেয়নি । প্রয়োজন ছিল কারফিউ জারি।
৩। করোনা পরীক্ষা সমস্যাঃ ২ মাসে করোনা পরীক্ষা তেমন বৃদ্ধি পায়নি । যেখানে উন্নত দেশ ২-৬ লাখ দিনে পরীক্ষা করছে সেখানে আমরা এখনও ১০ হাজারেও যেতে পারি নাই ।
৪।পরিকল্পনায় ভুলঃ করোনাকে কি ভাবে মোকাবেলা করবে এমন কোন পরিকল্পনা আমার চোখেই পরে নাই । ২মাস ৮০% মানুষ কে ঘরে বসে রাখলেও , ২০% মানুষ ইচ্ছে মত স্থানান্তর হয়েছে , ফলে এদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত বেশি হয়েছে দেশে । বর্তমানে আবার সেই ৮০% মানুষ কেও ছেড়ে দিচ্ছে , ফলে সহজেই তারা আবার এই ২০% মানুষের সাথে মিশে যাচ্ছে , আর আক্রান্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে ।শুরুতেই ১০০% মানুষ কে জোর করে নিজের অবস্থানে থাকতে বাধ্য করতে হতো এবং সরকার করোনায় তেমন কোন কঠোর হতে পারে নাই । ফলে যে পরিকল্পনা করেছিল তা ভুল হয়েছে ।
৫।বর্তমানে বড় ভুলঃ আক্রান্ত রোগিদের বাসায় রেখে চিকিৎসা । ফলে তার পরিবারে লোক আক্রান্ত হচ্ছে এমনি কি এই ভাবে চলতে থাকলে গ্রামও সম্পূর্ণ আক্রান্ত হয়ে যাবে ।
৬। জনগনের অসচেতনতাঃ এইটা আমাদের দেশে ছিল আছে এবং থাকবেই । এই জায়গা থেকে আমরা বেড় হতে পারবো না ।এই জন্য শুরুতে আমাদের উচিৎ ছিল কঠোর হওয়া । আর একটা টিম গঠন করে প্রতিটা গ্রাম থেকে শুরু করে প্রতিটা বাড়ি পর্যন্ত ১৫-২০ দিন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা।এই জাতিকে সচেতন করার থেকে সহজ নিয়ন্ত্রণ করা।
৭। বর্তমানে প্রয়োজন ১০০% কার্যকারি পদক্ষেপ নেওয়াঃ আগে কি ভুল হয়েছে সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে ১৫-২০ দিনের একটা পরিকল্পনা করেন । যে যেখানে আছে সেখানেই থাকবে। ১৫ দিনের মধ্যে যেখানে করোনা আক্রান্ত হবে তাদের আলাদা করতে হবে এবং সরকারের অধিনে নিতে হবে । সেই সাথে তাদের পরিবার কেও আলাদা করে রাখতে হবে ১৫দিন । নতুন কেউ আক্তান্ত হয় কি না দেখার জন্য। এক কথায় প্রতিটা বাড়িকে করোনা মুক্ত করতে হবে ১৫-২০ দিনে । কোন ব্যাক্তিকেই ১৫-২০ দিন বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া যাবে না।একটা টিম থাকবে তারা শুধু মানুষের যা প্রয়োজন তা পৌঁছে দিবে । আর এই টিম শুধু মাত্র একটা অঞ্চলের জন্য বা গ্রামের জন্য থাকবে। উদাহরণঃ আমার গ্রামে একজন করোনা রোগী ধরা পরেছে । তাদের আশে পাশের বাসায় লকডাউন , ফলে বেড় হতে দিচ্ছে না গ্রাম বাসি । তাদের যা প্রয়োজন তা সম্পূর্ণ গ্রামের মানুষের থেকে চাঁদা তুলে দিচ্ছে। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে করোনা রোগীদের আলাদা করতে পারলে এবং তাদের পরিবার কে আলাদা করতে পারলে চালানো অসম্ভ কিছুই না।কারণ বর্তমান পর্যন্ত করোনা রোগী দেশের জনগনের তুলনায় অনেক কম কিন্তু যে ভাবে চলছে এই ভাবে চলতে থাকলে সবাই আক্রান্ত হয়ে যাবে । তখন কেউ কাউকে হেল্প করতে পারবে না।
৮। পদক্ষেপ এখনই নিতে হবেঃ ঈদের পরে দেশে যদি লাশের মিছিলও হয় সরকারের পক্ষে জনগণকে বাসায় বসে রাখা সম্ভব হবে না । তাই এখনই এই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।টার্গেট করোনা রোগী আলাদা করা । টেস্ট করতে না পারলেও প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে যাদের লক্ষণ দেখা দিবে।
সর্বশেষ আমি বলতে চাই আমি আগেই ৫ টা পরিকল্পনার কথা বলেছিলাম । এই রকম কোন পরীকল্পনা গ্রহণ করতে পারলেই করোনা মুক্ত করা সম্ভব । তা না হলে কত দিন এই ভাবে সরকার দেশের মানুষ কে নিয়ন্ত্রণ করবে বা গরীব মানুষদের সাহয্য দিবে??? এই ভাবে চলতে থাকলে সরকারের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না । তাই এই সময় ১৫-২০ দিনের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে । তা হলেই একমাত্র সম্ভব হবে মক্ত হওয়া ।
১৫ দিনের পরিকল্পনা নিম্নরূপঃ (২২ মার্চ এই পোস্ট দিয়েছিলাম । এইটা কার্যকর হলে এতো দিন করোনা মুক্ত দেশ হয়ে যেতো। )
১। ১৫ দিন পর্যন্ত কারফিউ জারি । কোন ব্যাক্তি ১৫ দিন পর্যন্ত বাড়ি থেকে বের হতে পারবেনা । যে যেখানে আছে ১৫ দিন সেই খানেই অবস্থান করবে ।
২ । প্রতিটা গ্রামের প্রাথমিক শিক্ষক এবং মসজিদের ইমাম এসব দেখভালের দ্বায়িত্বে থাকবে। ঐ গ্রামের যা কিছু প্রয়োজন তারা একটা টিম করে নিরাপদে বাসায় পাঠিয়ে দিবে ।
৩ । সেনাবাহিনী , বর্ডার গার্ড , পুলিশ , আনসার সহ সকল বাহিনীর সদস্য প্রতিটা গ্রামে ক্যাম্প করবে যাতে কেউ আইন ভঙ্গ করতে না পারে । এছাড়া তারা বিভিন্ন বিষয়ে তদারকি করবেন। (প্রতিটা গ্রামে গড় ৫০জন সদস্য মোতায়ান করার ক্ষমাতা সরকারের আছে )
৪। জেলা প্রশাসাক সহ টিএনও , ইউএনও , বিসিএস ক্যাডার সহ সকল উচ্চ পদস্থ ব্যক্তির অধীনে একটা করে ইউনিয়ন পরিষদের দ্বায়িত্ব দিতে হবে । তারা সেই ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ড পরিচালনা করবে ।
৫। যে কোন রোগী বা করোনা আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া মাত্র বিশেষ নিরাপত্তা দিয়ে হাঁসপাতালে নিয়ে আসতে হবে ।
এই রোগের একমাত্র চিকিৎসা এইটা করোনা রোগীদের আলাদা করা ।১৫ দিনে রোগীদের আলাদা করেন তার পরিবারদের আলাদা করেন ।তার পরে শুধু রুগির পরিবার কে আলাদা করে ১৫ দিন দেখেন কোন রোগী পাওয়া গেলে আলাদা করে তাদের আরো ১৫ দিন দেখেন ।আর নতুন রোগী না পাওয়া গেলে সেই অঞ্চল কে করোনা মুক্ত ঘোষণা করেন। বর্তমানে যা হচ্ছে তাতে এই সব হচ্ছে কিন্তু ছড়িয়ে দেওয়ার পরে তাকে আলাদা করা হচ্ছে আর এই জন্য রোগি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আমার লেখায় কোন ভুল হলে ।আমার চোখের সামনে যা হচ্ছে তাই শুধু আলোচনা করেছি । আমি কোন মহাজ্ঞানী না সাধারণ মানুষ মাত্র ।