পরীক্ষা পদ্ধতি
সমাজসেবা অধিদপ্তর ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ বিধি অনুসারে, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করা হয়। ক্ষেত্র বিশেষে নেওয়া হয় ব্যবহারিক পরীক্ষায়ও। অধিদপ্তরের প্রশাসন ও অর্থ শাখা সূত্রে জানা যায়, তৃতীয় শ্রেণির পদগুলোতে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে। এর মধ্যে ৭০ নম্বরের লিখিত এবং ৩০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষায় মোট ৫০ নম্বরের মধ্যে ৪০ নম্বরের লিখিত এবং ১০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। এমসিকিউ পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষা হয়ে থাকে। পদ অনুসারে করা হয় প্রশ্নপত্র। লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। কম্পিউটার অপারেটর পদের লিখিতি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের জন্য বসতে হবে টাইপিং টেস্ট বা ব্যাবহারিক পরীক্ষায়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ডাকা হবে মৌখিক পরীক্ষায়।
পরীক্ষার প্রস্তুতি
সমাজসেবা অধিদপ্তরে কর্মরতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তৃতীয় শ্রেণির পদগুলোতে বোর্ড নির্ধারিত এসএসসি ও এইচএসসির বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই থেকে বেশি প্রশ্ন করা হয়। অষ্টম শ্রেণির পাটিগণিত ও বীজগণিত থেকেও প্রশ্ন থাকে। পাঠ্য বইগুলো বেশি বেশি চর্চা করলে লিখিত পরীক্ষায় ভালো করা যাবে। ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার সমাজকর্মী পদে কর্মরত মো. ফারুকুজ্জামান জানান, সমাজকর্মী পদে অষ্টম-দশম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই থেকে বেশি প্রশ্ন করা হয়। বাংলা ব্যাকরণে সন্ধিবিচ্ছেদ, কারক, বিভক্তি, সমাস, ণত্ববিধান, ষত্ববিধান, প্রবাদ প্রবচন, এককথায় প্রকাশ, বাগধারা থেকে প্রশ্ন আসে। এ ছাড়া সাহিত্য অংশ থেকেও প্রশ্ন করা হয়। ইংরেজি অংশ থেকে Translation, Tense, Preposition, Parts of speech, Verb, Number, Gender, Voice Change, Synonym, Antonym, Transformation of Sentence, Appropriate Word, Idioms and Phrases থেকে প্রশ্ন আসে। গণিতে সরল, সুদকষা, শতকরা, ঐকিক নিয়ম, লসাগু, গসাগু অধ্যায় থেকে প্রশ্ন আসে। সাধারণ জ্ঞানে প্রশ্ন করা হয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ঘটনাবলি থেকে। প্রশ্ন থাকে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ থেকেও।
বিভিন্ন প্রকাশনীর নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি সহায়ক বই পাওয়া যায় বাজারে। সহায়ক হতে পারে এসব বই। বাজারে সাধারণ জ্ঞানের বেশ কিছু প্রকাশনীর বই পাওয়া যায়। পড়তে পারেন গোলাম মোস্তফা কিরনের ‘আজকের বিশ্ব’ ও সেলিম গাজীউর রহমানের ‘স্বপ্নপূরণ’।
মৌখিক পরীক্ষায় প্রার্থীর নিজের সম্পর্কে, পঠিত বিষয় ও নিজ জেলা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। প্রশ্ন করা হতে পারে সাধারণ জ্ঞান থেকেও।
নিয়োগ বিজ্ঞতির তথ্যঃ
হাউস প্যারেন্ট কাম টিচার পদে ১৩ জন, সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর ১০ জন, ফিল্ড সুপারভাইজার ৫০ জন, সমাজকর্মী (ইউনিয়ন) ৪৬৩ জন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ১৫৭ জন, গাড়িচালক ১২ জন এবং অফিস সহায়ক পদে ২৫৫ জন নিয়োগ পাবে। হাউস প্যারেন্ট কাম টিচার পদে নিয়োগ দেওয়া হবে অস্থায়ী রাজস্ব খাতে ও বাকি সব পদে স্থায়ী রাজস্ব খাতে। পদ অনুসারে নিয়োগপ্রাপ্তদের কর্মস্থল হবে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনস্থ কার্যালয়ে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ছাপা হয়েছে ১১ জুলাই বাংলাদেশ প্রতিদিন ও যুগান্তরে। পাওয়া যাবে www.dss.gov.bd ওয়েবসাইটে ও bit.ly/2L0LrfQ লিংকে।
আবেদনের যোগ্যতা
হাউস প্যারেন্ট কাম টিচার পদে আবেদনের যোগ্যতা দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতকসহ ব্যাচেলর অব স্পেশাল এডুকেশন ডিগ্রি। ব্রেইল পদ্ধতিতে কম্পিউটার চালনায় অভিজ্ঞতা থাকলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এইচএসসি পাস হলেই আবেদন করা যাবে সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে। সাঁটলিপিতে ইংরেজি প্রতি মিনিটে ৮০, বাংলায় ৫০ শব্দ এবং কম্পিউটার কম্পোজে ইংরেজি ৩০ ও বাংলায় ২৫ শব্দের গতি থাকতে হবে। ফিল্ড সুপারভাইজার পদে আবেদনের যোগ্যতা ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতক ডিগ্রি। এ ছাড়া স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে থাকতে হবে কম্পিউটার চালনা প্রশিক্ষণ। দ্বিতীয় বিভাগে এইচএসসি পাস হলেই আবেদন করা যাবে সমাজকর্মী (ইউনিয়ন) পদে। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে আবেদনের জন্যও এইচএসসি পাস হতে হবে। বাড়তি যোগ্যতা লাগবে কম্পিউটারে প্রশিক্ষণ এবং কম্পিউটার চালনায় ওয়ার্ড প্রসেসিং, ডাটা এন্ট্রি ও টাইপে ইংরেজিতে এবং বাংলায় মিনিটে ২০ শব্দের গতি। গাড়িচালক পদে আবেদনের যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে অষ্টম শ্রেণি পাস। গাড়ি চালনায় অভিজ্ঞতা এবং হালকা ও ভারী যানবাহন চালনার ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে। এসএসসি পাস হলেই আবেদন করা যাবে অফিস সহায়ক পদে। ১ জুলাই ২০১৮ তারিখে সাধারণ প্রার্থীর বয়সসীমা ১৮ থেকে ৩০ বছর। শারীরিক প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের ক্ষেত্রে বয়স ১৮-৩২ বছর। তবে একই তারিখে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের বেলায় বয়সসীমা ১৮-৩০ বছর। ফিল্ড সুপারভাইজার পদে ও সমাজকর্মী (ইউনিয়ন) পদে বিভাগীয় প্রার্থীদের বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩৫ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য।
আবেদন যেভাবে
আবেদন করতে হবে অনলাইনে। dss.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ ও পরীক্ষার ফি জমা দেওয়া শুরু হয়েছে ১৫ জুলাই। আবেদনের শেষ সময় ২৯ জুলাই রাত ১২টা। অনলাইন আবেদনের সময় ৩০০ বাই ৩০০ পিক্সেল ছবি এবং ৩০০ বাই ৮০ পিক্সেলের স্বাক্ষর স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। ছবির সাইজ সর্বোচ্চ ১০০ কেবি এবং স্বাক্ষরের সাইজ সর্বোচ্চ ৬০ কেবি হতে হবে। আবেদন সাবমিটের আগে সব তথ্য ভালো করে দেখে নিতে হবে, যাতে কোনো ভুল না থাকে। অনলাইনে জমা দেওয়া আবেদনের কপি প্রিন্ট দিয়ে এবং ডাউনলোড দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়ার সময় থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি জমা দিতে হবে। ইউজার আইডি ব্যবহার করে টেলিটক প্রি-প্রেইড মোবাইল থেকে এসএমএসের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি বাবদ অফিস সহায়ক পদের জন্য ৫৬ টাকা ও বাকি সব পদের জন্য ১১২ টাকা জমা দিতে হবে।
প্রবেশপত্র ও অন্যান্য
dss.teletalk.com.bd অথবা www.dss.gov.bd ওয়েবসাইটে জানা যাবে প্রবেশপত্র প্রাপ্তির সব তথ্য। এ ছাড়া প্রার্থীর দেওয়া মোবাইল নম্বরে এসএমএসেও জানানো হবে। এসএমএসে পাঠানো ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে পরবর্তী সময়ে রোল নম্বর, পদের নাম, ছবি, পরীক্ষার তারিখ, সময় ও পরীক্ষাকেন্দ্রের তথ্যসহ প্রবেশপত্র ডাউনলোড দিয়ে প্রিন্ট করে নেওয়া যাবে। প্রবেশপত্রটি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার সময় সঙ্গে রাখতে হবে।
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় বসার আগে জমা দিতে হবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। লাগবে সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের কপি, নাগরিকত্ব সনদ, চারিত্রিক সনদ, কোটার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সনদ প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার দ্বারা সত্যায়িত করে জমা দিতে হবে। মৌখিক পরীক্ষার দিন সঙ্গে রাখতে হবে সব সনদের মূল কপি।