শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় ফেল করা প্রার্থীদের সনদ চাওয়ার ঘটনায় রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। রোববার (২৩ জুন ২০২৪) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রার্থীরা সড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। পুলিশ তাদের সরে যেতে অনুরোধ জানালে এবং আলোচনার জন্য প্রতিনিধি পাঠানোর প্রস্তাব দিলেও তারা সড়ক অবরোধ চালিয়ে যায়। তারা চেয়েছিল যে রাস্তা বন্ধ করে রাখলে উপদেষ্টা এসে তাদের সঙ্গে দেখা করবেন। বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও রাস্তা না ছাড়ায় পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।
বিক্ষোভকারীরা দাবি করছেন, তারা প্রিলিমিনারি ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভাইভায় ভালো পারফরম্যান্স করা সত্ত্বেও তাদের 'ফেল' করানো হয়েছে। তাই তারা শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার সনদ দাবি করছেন। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিলেও প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তারা বারবার সড়কে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে, তবে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়।
এর আগের সপ্তাহেও তারা ঢাকার ইস্কাটনে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)-এর কার্যালয়ের সামনে একই দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন।
অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন প্রার্থী ভাইভার জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত ৪ জুন চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হলে তাদের মধ্য থেকে ৬০ হাজার ৫২১ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। অনুত্তীর্ণ ২৩ হাজার প্রার্থীর একাংশ রোববার সকাল থেকে এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে তাদের উত্তীর্ণ ঘোষণা করে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।
গত ১৫ জুন অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের পক্ষ থেকে এনটিআরসিএকে দেওয়া স্মারকলিপিতে অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের ফল পুনর্বিবেচনার দাবি জানানো হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিধি অনুযায়ী একজন পরীক্ষার্থী লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় ৪০ শতাংশ নম্বর পেলে পাস বলে গণ্য হন। লিখিত পরীক্ষায় ৪০ শতাংশ নম্বর পেয়েই একজন পরীক্ষার্থী ভাইভার জন্য নির্বাচিত হন। ভাইভার ২০ নম্বরের মধ্যে ১২ নম্বর অ্যাকাডেমিক ফলাফলের ওপর এবং বাকি ৮ নম্বর ড্রেসকোড, আচরণ ও প্রশ্ন জিজ্ঞাসা নিয়ে। এর মধ্যে ৩.২ নম্বর পেলেই প্রার্থীর পাস করার কথা।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, "অনেকেই সবগুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার পরেও ফেল করেছেন। যেটা ভাইভা বোর্ডের মনগড়া সিদ্ধান্ত ছিল যা অনেক মেধাবী পরীক্ষার্থীর মনে দাগ কেটেছে।" এই যুক্তিতেই অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের ফল পুনর্বিবেচনার দাবি জানানো হয়েছে।