চাকরি খোঁজার ওয়েবসাইট ‘বিডিজবস’ এ বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি সঙ্ঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। গত তিন-চার বছরে কাতারভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের নাম করে এ টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। প্রতারক চক্রটির মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা পুলিশ। তারা হলো- শাহীন হায়দার (মূল হোতা), হাসান, তাজুল ও শ্যামল।
বুধবার ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (তেজগাঁও) বিপ্লব কুমার সরকার তার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। বাংলা ট্রিবিউন।
বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘এই চক্রের সাথে বিডিজবসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা সম্পৃক্ত আছে। যারা এই প্রতারকদের সহায়তা করেছে। কাতারভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডেলটা গ্রুপ, আলী বিন গ্রুপ, এবিএ গ্রুপের নাম করে রিটেইল স্টোর ম্যানেজার বা কমার্শিয়াল ম্যানেজার পদের জন্য বিডিজবসে চাকরি বিজ্ঞাপন দিত প্রতারক চক্র। চাকরিপ্রত্যাশীদের প্রলোভন দেখানো হতো, লোভনীয় বেতন ও সপরিবারে কাতারে গিয়ে চাকরি করার সুযোগ পাওয়ার কথা বলা হতো।’
প্রতারণার প্রক্রিয়া সম্পর্কে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, আগ্রহী প্রার্থীরা বিডিজবসের বিজ্ঞাপন দেখে, ওই লিংকে গিয়ে আবেদন করেন। প্রার্থীকে আবেদনে একটি ই-মেইল অ্যাড্রেস দিতে হয়। আবেদনের পাঁচ-সাত দিন পর প্রতারকচক্র প্রার্থীর কাছে একটি ই-মেইল পাঠায়। এতে বলা হয়, ওই পদের জন্য আপনাকে নির্বাচন করা হয়েছে। নিয়োগটি সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানির একজন প্রতিনিধি বাংলাদেশে অবস্থান করছে বলে জানানো হয়। কোম্পানি প্রতিনিধির ফোন নম্বরও দিয়ে দেয়া হয়। পরে আবেদনকারী ওই প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করলে নানা কথা বলে ব্যস্ততা দেখানোর চেষ্টা করে। স্বাভাবিকভাবে আবেদনকারী বারবার যোগাযোগ করে এবং প্রতিনিধির সাথে এক সময় কথা হয়। একজন আবেদনকারীর কাছ থেকে তিন-চার লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় প্রতারকরা।
বিপ্লব কুমার বলেন, ‘আবেদনকারীকে কাতার দূতাবাসের মাধ্যমে সর্বশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র সত্যয়ন, অফার লেটার, অ্যাপয়েনমেন্ট লেটার, কনফারমেশন লেটার এ ধরনের নানা অজুহাতে টাকা নেয় প্রতারকরা। এই টাকার পরিমাণ জনপ্রতি তিন-চার লাখ টাকা। বিকাশ ও রকেটের মাধ্যমে এসব টাকা হাতিয়ে নিত তারা। টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর যেসব নম্বর থেকে যোগাযোগ ও বিকাশ বা রকেটে টাকা নেয়া হতো, সেসব নম্বরও বন্ধ করে দিত। এরপর থেকে প্রতারকরা লাপাত্তা।’
এ প্রতারক চক্রের সাথে বিডিজবসের কারা সম্পৃক্ত এমন প্রশ্নে বিপ্লব কুমার বলেন, ‘আমরা বিডিজবসের সুনির্দিষ্ট কয়েকজনের সম্পৃক্ত থাকার ব্যাপারে জানতে পেরেছি। তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
একজন ভুক্তভোগী প্রতারণার অভিযোগ এনে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় মামলা করেন। মামলার ভিত্তিতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চন জোনের এডিসি হাফিজ আল ফারুকের নেতৃত্বে অনুসন্ধানের পর এ চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে এনে আরো বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিসি বিপ্লব কুমার।

মন্তব্যঃ  এইটাই শুধু না প্রতিদিন লক্ষ্য করা যাচ্ছে অনেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান জাতীয় পত্রিকাতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাধারণ চাকরির প্রার্থীদের থেকে ৫০০-২১০০টাকা করে বিকাশ নিচ্ছে , এইটাও প্রশাসন কে দেখা উচিৎ  । সেই সাথে সপ্তাহিক চাকরির পত্রিকা গুলোতেও এই রকম অসংখ্য ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়ে থাকে । আমাদের দেশে এইটা একটা ব্যবসা হয়ে দারিয়েছে । কোটি কোটি  সাধারণ চাকরির প্রার্থীদের থেকে নিয়ে নিচ্ছে। বেসরকারি ৯৯% চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে কোন পত্রিকা বা সপ্তাহিক পত্রিকা কোন ভেরিফেকেশন করে না এমন কি বিডিজবসও  একই দলে । এমন চলতে থাকলে দেশের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যাবে ।