এবার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) আয় ৫৬ কোটি টাকা। বুধবার মধ্যরাতে অনলাইনে আবেদন নেয়া শেষ হয়।
১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনে ৪০ হাজার শূন্যপদের জন্য ৩১ লাখ আবেদন জমা পড়েছে। এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান এসএম আশফাক হুসেন যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বুধবার রাত ১২টায় আবেদনপত্র নেয়া শেষ হয়। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা বা শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত আবেদন ফি জমা দেয়া যাবে।
সারা দেশে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ৩৯ হাজার ৫৩৫ শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের চাহিদাপত্র আসে। সে অনুযায়ী এনটিআরসিএর দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৯ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদনপত্র নেয়া হয়।
ওই সব প্রবেশ পদে প্রাপ্ত আবেদন থেকে এখন জাতীয় মেধাতালিকা ধরে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
এনটিআরসি চেয়ারম্যান জানান, ফি জমাদান শেষে পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে শূন্যপদে নিয়োগের সুপারিশ করার কাজ শেষ করা হবে।
কেননা এর পর অবশিষ্ট শূন্যপদে আরেক দফা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। এ ছাড়া নতুন নিবন্ধন পরীক্ষা নেয়ার কাজ চলবে। এনটিআরসিএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে শূন্যপদে আবেদনকারীদের আবেদন যাচাই-বাছাই কাজ শেষ করা হবে। যাচাইয়ে অগ্রাধিকার পাবে বয়স।
২০১৮ সালের ১২ জুনে যাদের বয়স ৩৫ বছর পার হয়েছে, তারা নিয়োগের জন্য বিবেচিত হবেন না। এ ছাড়া ২০১৮ সালের এমপিও নীতিমালার শর্ত পূরণ করতে হবে।
এ নিয়োগে ইনডেক্সধারী (এমপিওভুক্ত) শিক্ষকদেরও আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এনটিআরসিএ প্রমাণ পেয়েছে, এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কেউ কেউ জাল ইনডেক্স নম্বর ব্যবহার করে আবেদন করেছে। যাচাইয়ে ওই সব আবেদনও বাতিল করা হবে।
সূত্র আরও জানায়, একটি প্রতিষ্ঠানে একটি পদের বিপরীতে একজনকেই মনোনয়ন সুপারিশ করা হবে। ওই সুপারিশের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে এসএমএস করে জানিয়ে দেয়া হবে। নির্বাচিত ব্যক্তিকে এক মাসের মধ্যে কাজে যোগদান করতে হবে। এর পর বিষয়টি এনটিআরসিএকে অবহিত করবে প্রতিষ্ঠান।
এক মাসের মধ্যে যোগদান না করলে মনোনয়ন বাতিল করে নতুন প্রার্থী সুপারিশ করা হবে। এর পর নির্বাচিতদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিকে মোবাইল ফোনে এসএমএস করে নির্বাচিতদের তথ্য জানিয়ে দেয়া হবে।
এদিকে শুধু আবেদন নিয়ে বাছাই করে প্রার্থী নির্বাচনের মতো কাজে প্রতি আবেদনের জন্য ১৮০ টাকা করে ফি নেয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা।
কবির হোসেন নামে একজন প্রার্থীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার কথা হয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি)। ওই প্রার্থী বলেন, একটি আবেদনে একটি প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের সুযোগ ছিল। এতে একজন প্রার্থীকে একাধিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে হয়েছে। তিনি ১৪ প্রতিষ্ঠানে আবেদন করেছেন।
ফলে প্রতিটির জন্য ১৮০ টাকা করে দিতে হয়েছে। বিসিএস বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে বিষয় পছন্দের মতো ব্যবস্থা করা হলে বেকারদের অনেক টাকা সাশ্রয় হতো।
কেননা দুই বছর পর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ায় এবং চাকরি পাওয়ার আশায় তার মতো অনেকেই ১৫-২০টি করে আবেদন করেছেন।
এতে এনটিআরসিএর ‘পোয়াবারো’ হয়েছে। ৩১ লাখ প্রার্থীর কাছ থেকে এনটিআরসিএ আবেদন ফি বাবদই মোট আদায় হবে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, প্রথম থেকে চতুর্দশ নিবন্ধন পরীক্ষায় প্রায় সাড়ে ৬ লাখ প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাদের মধ্যে অবশ্য অনেকে অন্য চাকরিতে চলে গেছেন। অনেকে ইতিমধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন। সূত্রঃ যুগান্তর