রোহিঙ্গারা পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন স্টেটের উত্তরাংশে বসবাসকারী একটি জনগোষ্ঠী। এদের বেশির ভাগই মুসলমান। রাখাইন স্টেটের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হলো রোহিঙ্গা। সংখ্যায় প্রায় ২০ লাখ। সপ্তম-অষ্টম শতাব্দীতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উদ্ভব হয়। প্রাথমিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যীয় মুসলমান ও স্থানীয় আরাকানিদের সংমিশ্রণে রোহিঙ্গা জাতির উদ্ভব। পরবর্তী সময়ে চাটগাঁইয়া, রাখাইন, আরাকানি, বার্মিজ, বাঙালি, ভারতীয়, মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষের মিশ্রণে এই জাতি ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতাব্দীতে পূর্ণাঙ্গ জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
ধারণা করা হয়, রোহিঙ্গা নামটি এসেছে আরাকানের রাজধানীর নাম ম্রোহং থেকে : ম্রোহং>রোয়াং>রোয়াইঙ্গিয়া>রোহিঙ্গা। তবে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে আরাকানের উল্লেখ রয়েছে রোসাং নামে।
২৫ আগস্ট ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলায় ১২ জন নিরাপত্তা কর্মী নিহত হওয়ার পর মায়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরোদ্ধে “ক্লিয়ারেন্স অপারেশন” শুরু করে। এই অপারেশনে ৪০০-৩০০০ রোহিঙ্গা নিহত হন, অনেক রোহিঙ্গা আহত, নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হন। তাদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং ৪০০,০০০ (মায়ানমারের রোহিঙ্গার ৪০%) এর বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ৯০০,০০০ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে দক্ষিণ-পূর্বের পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এছাড়া অন্যান্য প্রতিবেশী দেশসহ বেশ কিছু মুসলিম দেশে পালিয়ে গিয়েছে। ১০০,০০০-এর বেশি রোহিঙ্গা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচুত হয়ে মায়ানমারের সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত ক্যাম্পে রয়েছে।
১. রোহিঙ্গা ইস্যু সম্পর্কে দাতা সংস্থাগুলোর আগ্রহ হ্রাস পাওয়ায় বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
২. প্রতিদিন যদি ৩০০ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে পাঠানো হয়, তাহলে সময় লাগবে আট বছর৷ অর্থাৎ ২০২৬ সাল নাগাদ রোহিঙ্গাদের পেছনে খরচ করতে হবে ৫৯০ কোটি ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা৷ তার মানে বাংলাদেশকে অনেক দিন ধরে রোহিঙ্গাদের পুশতে হবে৷
৩. রোহিঙ্গা বসবাসকারী এলাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাবে৷ তাদের থাকার জন্য বন এবং পাহাড় কাটা হচ্ছে৷ এতে ওইসব এলাকায় পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে।
৪. নিরাপত্তার প্রশ্নটি এখন বাংলদেশের সামনে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে দীর্ঘকাল অবস্থান করলে মূলত নিচের তিন ধরনের সমস্যা হতে পারে৷
১. নিরাপত্তা ঝুঁকি
২. সামাজিক সমস্যা
৩. রাজনৈতিক সমস্যা
সহিংসতা, হত্যা, নির্যাতনের কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা নিচে তুলে ধরা হলো….
প্রথমত, অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারে সহিংসতা ও ‘জাতিগত নিধন’ নিঃশর্তে বন্ধ করা।
দ্বিতীয়ত, অনতিবিলম্বে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল প্রেরণ করা
তৃতীয়ত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান এবং এ লক্ষ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় (safe zones) গড়ে তোলা।
চতুর্থত, রাখাইন রাজ্য হতে জোরপূর্বক বিতাড়িত সকল রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা।
পঞ্চমত, কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
মূলকথা, এই সমস্যার সমাধানে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও মায়ানমারকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে।
ক)
প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল প্রজাতন্ত্রের কোন বিষয় অথবা কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থায় উদ্ভূত বিষয় নিষ্পত্তি বা বিচারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সালিস-সভা। একদিকে রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রতিষ্ঠান ও আমলাদের এবং অন্যদিকে বেসরকারি সংস্থা ও নাগরিকদের মধ্যকার সৃষ্ট বিরোধ প্রশাসনিকভাবে বিচার-নিষ্পত্তির অনুশীলনের ধারণা থেকেই প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের উদ্ভব। ১৯৪৭ সালের ক্রাউন প্রসিডিংস অ্যাক্ট-এর ভিত্তিতেই ব্রিটিশ আমলে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল গড়ে উঠেছিল। ফ্রান্সেই রয়েছে সবচেয়ে শক্তিশালী ধরনের প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। একে বলা হয় কাউন্সিল অব স্টেট সিস্টেম। বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন নামে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল বিদ্যমান। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার এবং অপরাধ দমনে সরকার ট্রাইব্যুনাল ব্যবস্থার প্রবর্তন করে।
বাংলাদেশ সংবিধানের ১১৭ অনুচ্ছেদে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের বিধান রাখা হয়েছে। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালস অ্যাক্ট ১৯৮০ (১৯৮১ সালের অ্যাক্ট-৭) বলে বাংলাদেশে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়। ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে সরকার মূলত বর্তমান কিংবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক অথবা কোনো আইনজীবীকে নিয়োগ করতে পারে।
বর্তমানে দুটি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল রয়েছে, একটি ঢাকায় এবং অপরটি বগুড়ায়। এছাড়া আরও কিছু ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ কমিশন রয়েছে, যেমন ইনকাম ট্যাক্স ট্রাইব্যুনাল, সিকিউরিটিস একচেঞ্জ কমিশন এবং ট্যাক্সেস সেটেলমেন্ট কমিশন।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জাদুঘর ও সংগ্রহশালা। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে অবস্থিত দেশের প্রধান জাদুঘর। এটি মার্চ ২০, ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং ৭ আগস্ট, ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর তারিখে এটিকে জাতীয় জাদুঘরের মর্যাদা দেয়া হয়।
জাদুঘরটি শাহবাগ মোড়ের সন্নিকটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক ও চারুকলা ইন্সটিটিউটের পাশে অবস্থিত। এখানে নৃতত্ব, চারুকলা, ইতিহাস, প্রকৃতি এবং আধুনিক ও বিশ্ব-সভ্যতা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি বিষয়ে আলাদা ৪৪টি প্রদর্শনীকক্ষ (গ্যালারি) রয়েছে। এছাড়া এখানে একটি সংরক্ষণাগার, গ্রন্থাগার, মিলনায়তন, আরকাইভ, সিনেস্কেইপ এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনালয় রয়েছে।
জাতীয় জাদুঘরের নিদর্শনাদির বিভাগগুলো হচ্ছেঃ-
এছাড়া রয়েছে জনশিক্ষা বিভাগ।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি বিশেষ দিবস। প্রতিবছর বাংলাদেশে ১৪ ডিসেম্বর দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৪ই ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সকল বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড বলতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টুকুতেই পাকিস্তানী হানাদারবাহিনী কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের জ্ঞানী-গুণী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করাকে বুঝায়।এ কাজে বাংলাদেশীদের মধ্যে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর লোকেরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিল।
পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের পর ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রেখে যায়। ১৯৭২ সালে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সঙ্কলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক নিউজ ম্যাগাজিন ‘নিউজ উইক’-এর সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের লেখা থেকে জানা যায়, শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। এটি ঢাকার মীরপুরে অবস্থিত। স্মৃতিসৌধটির স্থপতি মোস্তফা হালি কুদ্দুস।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র হলো ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁচ্ছে দেওয়ার একটি মাধ্যম। “ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কার্যাবলিতে মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা (বিনামূল্যে প্রদত্ত), পরিবার পরিকল্পনা সেবা (বিনামূল্যে প্রদত্ত), অন্যান্য সেবা (বিনামূল্যে প্রদত্ত), স্যাটেলাইট ক্লিনিক (ওয়ার্ড পর্যায়), বাড়ি বাড়ি পরিদর্শনের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবা (পরিবার কল্যাণ সহকারি কর্তৃক) প্রভৃতি সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কার্যাবলী–
মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা (বিনামূল্যে প্রদত্ত)
পরিবার পরিকল্পনা সেবা (বিনামূল্যে প্রদত্ত)
অন্যান্য সেবা (বিনামূল্যে প্রদত্ত)
স্যাটেলাইট ক্লিনিক (ওয়ার্ড পর্যায়)
মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা (বিনামূল্যে প্রদত্ত)
পরিবার পরিকল্পনা সেবা (বিনামূল্যে প্রদত্ত)
সরকার নির্ধারিত মূল্য প্রদান সাপেক্ষে প্রদত্ত পরিবার পরিকল্পনা সেবা
বাড়ি বাড়ি পরির্দশনের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবা (পরিবার কল্যাণ সহকারী কর্তৃক)
বিনামূল্যে প্রদত্ত সেবা
সিএসবিএ কর্তৃক প্রদত্ত সেবা (বিনামূল্যে প্রদত্ত সেবা)
প্রয়োজনে যে কোন রোগীকে উচ্চতর সেবা কেন্দ্রে প্রেরণ (রেফার)
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার বা মুজিবনগর সরকার গঠিত হয় ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ১০ই এপ্রিল তারিখে। ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল এই সরকারের মন্ত্রীপরিষদের সদস্যরা শপথ গ্রহণ করেন।
১৭ এপ্রিল ১৯৭১ পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরে বৈদ্যনাথ তলার এক আমবাগানে মন্ত্রিপরিষদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। সকাল ৯ টা থেকেই সেখানে নেতৃবৃন্দ ও আমন্ত্রিত অতিথিদের আগমন শুরু হয়। দেশি বিদেশি প্রায় ৫০ জন সাংবাদিক উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বেলা ১১টায় শপথ অনুষ্ঠান শুরু হয়। কোরআন তেলাওয়াত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় এবং শুরুতেই বাংলাদেশকে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ রূপে ঘোষণা করা হয়। এরপর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি একে একে প্রধানমন্ত্রী ও তার তিন সহকর্মীকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। এরপর নতুন রাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে কর্নেল এম এ জি ওসমানী এবং সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ পদে কর্নেল আবদুর রবের নাম ঘোষণা করেন। এরপর সেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়।
Full Solution is ongoing…….Please stay with us……